দৈনিক আজকের পেপার

দৈনিক আজকের পেপার

নারায়ণগঞ্জের এসপি ও রূপগঞ্জের ওসির উপর অনাস্থা স্বতন্ত্র তিন প্রার্থীর

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

নারায়ণগঞ্জ- ১ রূপগঞ্জ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পক্ষপাতিত্ব মূলক আচরণের কারণে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, পিপিএম (বার) ও রূপগঞ্জের ওসি দিপক চন্দ্র সাহার উপর অনাস্থা এনেছে স্বতন্ত্র তিন প্রার্থী। অনাস্থা এনে মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা। অভিযোগে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ও রূপগঞ্জের ওসির নেতৃত্বে রূপগঞ্জের নির্বাচন পরিচালিত হলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এভাবে চলতে থাকলে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে সাহস পাবে না। নির্বাচন কমিশনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সুষ্ঠ ভোটের স্বার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ও নারায়ণগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যাহার দাবি জানিয়েছেন তারা।

অনাস্থা দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর আবেদনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার উল্লেখ করেন, আমার নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যাপকভাবে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনকে বলার পরেও কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে স্থানীয় সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর নিয়ন্ত্রিত সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা আমাদের কর্মীদের প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। প্রতিবাদ করতে গেলেই তাদের উপর নেমে আসছে বিভীষিকাময় নির্যাতন। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে না। উল্টো ভয় ভীতি দেখানো হচ্ছে। এসব বিষয়ে বারবার নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল ও রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ চন্দ্র সাহা কে অবহিত করার পরেও তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। নির্বাচনে জিতে দিতে গোলাম দস্তগীর গাজীর কাছ থেকে তারা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছে। আমি তাদের উপর অনাস্থা প্রকাশ করছি। অবিলম্বে তাদের প্রত্যাহার করা না হলে কোনভাবেই নির্বাচন সুষ্ঠ হওয়া সম্ভব নয়।

স্বতন্ত্র আরেক প্রার্থী তিনবারের উপজেলা চেয়ারম্যান ও রুপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: শাহজাহান ভূইয়া প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর এসপি ও ওসির বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে আবেদন করে। তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে গিয়ে আমি এবং আমার কর্মী সমর্থকরা প্রতিনিয়ত নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া স্থানীয় সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। যা নির্বাচনী আচারণ বিধি লঙ্ঘনের শামিল। নৌকার প্রার্থীর লোকেরা যে শুধু বাধা দিচ্ছে তাই নয়, ইতিমধ্যে আমার নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় আয়েশা আক্তার নামে এক নারীর উপর হামলা ও মারধর করেছে। দাউদপুরে আমার অস্থায়ী নির্বাচনী প্রচারণা কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে। আমার নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়া কর্মী সমর্থকদের প্রতিনিয়ত গোলাম দস্তগীর গাজীর সন্ত্রাসীরা হুমকি ধমকি দিচ্ছে। আর এই সন্ত্রাসী বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছে রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও রংধনু গ্রুপের মালিক রফিকুল ইসলাম। শুধু হুমকিই নয় এসব কর্মীদের বসতবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালাচ্ছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। উল্টো আমার কর্মী সমর্থকদেরকে ভয় দেখানো, এলাকা থেকে বিতারিত করা এবং মিথ্যে মামলায় জড়াচ্ছে। আর এই কাজে সরাসরি ইন্ধন দিচ্ছে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ চন্দ্র সাহা এবং নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল। আমি তাদের উপর অনাস্থা করছি। তাদের দ্রুত প্রত্যাহার করা হোক।

এছাড়াও জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকে অংশ নেওয়া প্রার্থী মো: ছাইফুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা ও রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ চন্দ্র সাহার বিরুদ্ধে একপেশে ভূমিকার অভিযোগ এনে প্রধান নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি তার অভিযোগ বলেন, সাধারণ ভোটার ও কর্মী সমর্থকদের নিয়ে প্রচারণায় অংশ নিয়ে পদে পদে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছি। স্থানীয় সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসীরা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সময় এবং নির্বাচনী প্রচারণা শেষে কর্মীরা বাড়ি ফেরার পথে বিভিন্ন স্থানে হামলা করছে। তারা নারী কর্মীদেরকে আক্রমণ করছে। ভোটের পর গুম- খুনের হুমকি দিচ্ছে। জমি ও বাড়ি দখল করে এলাকা ছাড়া হবে করা হবে বলেও হুমকি দিচ্ছে। অধিকাংশ জায়গায় লাঙ্গল প্রতিকের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। পুনরায় লাগাতে গেলে কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পার্ট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর নিয়ন্ত্রিত সংঘবন্ধ সন্ত্রাসীরা অস্ত্র উচিয়ে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে।

তিনি তার অভিযোগে বলেন, ভয়াবহ অবস্থা হচ্ছে সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের ফলে ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ নিয়ে গেলে অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে না। উল্টো যারা সন্ত্রাসী তাদের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সাধারণ ভোটারদের ও ভুক্তভোগীদের হয়রানি করছে। গোলাম দস্তগীর গাজী দীর্ঘদিন সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় তার অর্থের অভাব নেই, মানুষের ভূমি দখল করে বিক্রি করে এবং অনৈতিক ব্যবসা বাণিজ্য করে অঢেল টাকার মালিক হয়েছেন। এসব কালো টাকা দিয়ে নির্বাচনে জিততে সব আয়োজন করছেন তিনি। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, পিপিএম (বার) ও রূপগঞ্জের ওসি দিপক চন্দ্র সাহা কে বলার পরেও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না তারা। এ পর্যন্ত বেশকিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি তারা।

তাছাড়া এলাকার সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করছে রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও রংধনু গ্রুপের মালিক রফিকুল ইসলাম। তিনি শুধু হুমকিই নয় এসব কর্মীদের বসতবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালাচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। উল্টো আমার কর্মী সমর্থকদেরকে ভয় দেখানো, এলাকা থেকে বিতারিত করা এবং মিথ্যে মামলায় জড়াচ্ছে। অবিলম্বে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, পিপিএম (বার) ও রূপগঞ্জের ওসি দিপক চন্দ্র সাহা কে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে না দিলে আগামী ৭ জানুয়ারির ভোট প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সন্ত্রাসীদের দিয়ে ভোট কেন্দ্র দখল করে নিজেদের মতো করে ফলাফল ঘোষণা করা হবে। অবস্থা এমন হয়েছে যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীকে নির্বাচনে জয়ী করার এজেন্ডা হাতে নিয়ে কাজ করছে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, পিপিএম (বার) ও রূপগঞ্জের ওসি দিপক চন্দ্র সাহা। আমি তার উপর অনাস্থা প্রকাশ করছি। অবিলম্বে তাদের প্রত্যাহার দাবী করছি।

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনাকালে ইতিমধ্যে বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি ঘটনায় প্রার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের অবহিত করেছে এবং বেশ কিছু অভিযোগও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন বরাবর। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ পর্যন্ত কোন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি প্রশাসন।

dailyajkerpaper Copyright © All rights reserved. | This Site Developed by Arifin Riad