দৈনিক আজকের পেপার

দৈনিক আজকের পেপার

আগৈলঝাড়ায় ৫০ হাজার শতাংশ জমিতে মৎস্য ঘের! সরকারি রাস্তা গিলে খেলো ঘের প্রকল্প: চাষের জমি পেরিয়ে সংঘাতে দুই পক্ষ

আগৈলঝাড়ায় ৫০ হাজার শতাংশ জমিতে মৎস্য ঘের! সরকারি রাস্তা গিলে খেলো ঘের প্রকল্প: চাষের জমি পেরিয়ে সংঘাতে দুই পক্ষ

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ৫ শত একর (৫০ হাজার শতাংশ) জমি নিয়ে মৎস্য ঘের তৈরী করা হচ্ছে। ওই ঘেরের অধিকাংশ জমির মালিকদের না জানিয়ে ঘের তৈরীর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। সরকারী রাস্তা কেটে তারা ঘের তৈরী করছে। এঘটনা নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের চাঁদত্রিশিরা গ্রামে ৪ কিলোমিটার জুড়ে কৃষি জমিতে স্ক্যাভেটর দিয়ে মাটি কেটে মাছ চাষের জন্য মৎস্য ঘের তৈরী করছেন পাশ্ববর্তী কোটালীপাড়া উপজেলার প্রভাবশালী মো. সোয়েব ফকির। সে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজ করে জমির মালিকদের না জানিয়ে তাদের জমির মাটি কেটে মৎস্য ঘের তৈরী করছেন। জমির মালিদের বাঁধা উপেক্ষা করে ৫শত একর (৫০হাজার শতাংশ) জমি নিয়ে ঘের তৈরীর জন্য চার পাশে মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। এমন খবর জানতে পেরে বুধবার (২১ মে) সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফসলি আবাদি জমিতে ৭ থেকে ৮ দিন ধরে দিনে ও রাতে স্ক্যাভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কাটার কাজ চলছে।
ঘেরের মধ্যে থাকা জমির মালিক রাশেদ বাহাদুর, মুনমুন হাওলাদার, লুৎফর ভাট্টি, আজিজ ভাট্টি, হিমু বখতিয়ার, কাওসার ভাট্টি ও হান্নান মিয়া বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালী জামাল বখতিয়ার, খসরু বাহাদুর, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান ভাট্টি, ছালাম ভাট্টি, রিপন বাহাদুরসহ ২২ সদস্য বিশিষ্ট সোমাইরপাড়-চান্দ একতা মৎস্য খামার নামে একটি সমিতি গঠন করে। তারা আমাদের জমি পার্শ্ববর্তী কোটালীপাড়া উপজেলার উত্তরপার গ্রামের কাদের ফকিরের ছেলে প্রভাবশালী মো. সোয়েব ফকিরের নিকট প্রতি ৫২ শতাংশ জমি বার্ষিক ১০ হাজার টাকায় লিজ দিলেও জমির মালিকদের দিচ্ছে ৬ হাজার টাকা। অথচ আমাদের এলাকার মৎস্য খামার ব্যবসায়ী ১০ হাজার টাকা দিতে রাজি হলেও তাকে দেওয়া হয়নি। উক্ত ব্যক্তিরা সমিতির নামে নিজেরা লাভবান হয়ে জমির মালিকদের ঠকাচ্ছে। ওই ঘেরের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার শতাংশ জমি রয়েছে।
ঘেরের মধ্যে থাকা জমির মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান ভাট্টি অভিযোগ করে বলেন, ওই ঘেরের মধ্যে আমার ৮শত ৩২ শতাংশ জমি রয়েছে। আমাকে না জানিয়ে মৎস্য ঘের তৈরী করা হচ্ছে। শুনেছি সমিতির নামে কতিপয় ব্যক্তি কোটালীপাড়া এক লোকের কাছে লিজ দিয়েছে। এব্যাপারে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।
এব্যাপারে সোমাইরপাড়-চান্দ একতা মৎস্য খামার সমিতির সভাপতি মো. জামাল বখতিয়ার বলেন, ঘেরের লিজ নেওয়া ব্যক্তি প্রতি ৫২ শতাংশ জমিতে বার্ষিক ৬ হাজার টাকা দিবেন জমির মালিকদের। আমাদের নামে কতিপয় ব্যক্তি মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।
এঘটনায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পিযুষ রায় বলেন, জমির মালিকদের সমন্বয়ে ঘের তৈরী করা যাবে। বড় আকারের মাছের ঘের তৈরী করতে হলে উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা তানজিন বলেন, জমির শ্রেণী পরিবর্তণ করে মাছের ঘের তৈরী করা যাবে না। জমির শ্রেণী পরিবর্তণ করে ঘের তৈরী করলে ঘেরের মধ্যে থাকা জমির মালিকরা অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

dailyajkerpaper Copyright © All rights reserved. | This Site Developed by Arifin Riad