আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি:
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কায় কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের পূর্ব দাসপাড়া ১নং ওয়ার্ডে সাবেক ইউপি সদস্য নারায়ণ চন্দ্র দাসের বাড়ি থেকে মালেক মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৪৬০ ফুট সিসি ঢালাই রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয় গত ১২ জুন। প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজটি বাস্তবায়ন করছে মুন্সী ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

শনিবার সকালে কাজ চলাকালে স্থানীয় খোকন মিয়া, মঞ্জু শেখ, খলিল খান, রোকন মিয়া, নজরুল ইসলামসহ শতাধিক ব্যক্তি রাস্তা নির্মাণে বাধা দেন। এর প্রতিবাদে রাস্তার সুফলভোগী আবু সালেহ, প্রিয়াংকা দাস, সিরাজ মিয়া, নিরঞ্জন দাস, ইউনুস মিয়া, পরিতোষ দাসসহ অর্ধশতাধিক মানুষ পাল্টা অবস্থান নেন। এতে ঘটনাস্থলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

[caption id="attachment_3635" align="alignnone" width="300"] আগৈলঝাড়ায় রাস্তা নিয়ে দ্বন্দ্ব, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কায় নির্মাণ কাজ স্থগিত[/caption]

রাস্তা নির্মাণের বিরোধিতাকারীরা জানান, নির্মাণস্থলে আগে পানি নিস্কাশনের একটি প্রাকৃতিক খাল ছিল, যা দুই বছর আগে ভরাট করে দেওয়া হয়। ফলে অতিবৃষ্টির সময় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে এলাকার পুকুর ও জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়। তারা বলেন, রাস্তা নির্মাণে তাদের আপত্তি নেই, তবে আগে সঠিকভাবে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে তারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।

স্থানীয় কলেজছাত্র আবু রায়হান বলেন, গত বছর আমাদের যৌথ পুকুরে দুই লাখ টাকার মাছ চাষ করেছিলাম। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে মাছ মরে যায় এবং পরে পানি বাড়লে মাছ ভেসে যায়।

অন্যদিকে রাস্তার পক্ষে অবস্থানকারী পরেশ দাস বলেন, রাস্তার জায়গায় আগে একটি ডাঙ্গা ছিল। বর্তমানে ওই রাস্তা দিয়ে ধান পরিবহন, যাতায়াত এবং যানবাহন চলাচল সহজ হয়েছে।

বাগধা ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি বলেন, আমি বর্তমানে বাইরে আছি। ফিরে এসে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধানের উদ্যোগ নেব।

উপজেলা প্রকৌশলী রবীন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ফলে ঠিকাদারকে আপাতত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারিহা তানজিন বলেন, আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছি,তিনি যেন সরেজমিন গিয়ে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমন্বয়ের ভিত্তিতে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেন।