বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র হারিছুর রহমান হারিছকে ঘিরে একের পর এক বিতর্ক উসকে দিচ্ছে তার ‘বিশেষ সুবিধা প্রাপ্তি’ ইস্যু। সাধারণ বন্দিদের তুলনায় ‘রাজকীয়’ জীবনযাপন করছেন এমন অভিযোগে গোটা গৌরনদীজুড়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সান্টু সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, হারিছ কোর্ট হাজতে আরামদায়ক চেয়ারে বসেন, মোবাইল ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন এবং বাইরে থেকে আনা খাবার খেতেন। নিয়ম অনুযায়ী তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি; বরং সুষ্ঠু সুবিধার জন্য আনুমানিক “বিশেষ বন্দি” হিসেবে আলাদা কক্ষে রাখা হয়েছে। যদিও পোস্টটি পরবর্তী সময়ে মুছে ফেলা হয়, তবে সান্টু দাবি করেন, তার কথাগুলো বাস্তব ঘটনার প্রতিফলন।
অভিযোগের জবাবে গৌরনদী আদালতের জিআরও বেলাল হোসেন বলেন, তার দায়িত্বকালে হারিছকে তিনবারই নিয়মমাফিক এজলাসে হাজির করা হয়েছে এবং কোনো অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করা হয়নি। কারাগারের জেলা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া অভিযোগগুলোকে ‘উদ্ভট’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এ বিষয়ে সিনিয়র জেল সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। তবে সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা ও পৌর বিএনপি,সহযোগী সংগঠনসমূহ গৌরনদী সরকারি কলেজ গেট মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলে উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক সৈয়দ সরোয়ার আলম বিপ্লব, সদস্য সচিব জহির সাজ্জাদ হান্নান, পৌর বিএনপি ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সফিকুর রহমান স্বপন প্রমুখ জানালেন, হারিছের বিরুদ্ধে ২৪ জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত নির্মম হত্যাকাণ্ডের জড়িত থাকার দাবি করা হচ্ছে। তারা স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন।
সম্প্রতিক সময়ে গৌরনদী অঞ্চলে রাজনৈতিক সন্ত্রাস বৃদ্ধির পেছনে হারিছের ভূমিকা চিহ্নিত করে বিএনপি নেতারা তার বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। এখন প্রশ্ন, কারাগারেই কি রাজকীয় বন্দিত্বের সত্যতা উদঘাটিত হবে?
প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ রাজীব ইসলাম তারীম ।। মোবাইল : +88 01818052282
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৪ |